শহীদ আফ্রিদি: টি-টোয়েন্টির আগেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারের প্রতিচ্ছ বিওসমান সামিউদ্দিন

বব উলমারই প্রথম বুঝতে পারেন যে শহীদ আফ্রিদি তার সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা একজন ক্রিকেটার ছিলেন। উলমার, যিনি নিজেও সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা একজন কোচ ছিলেন, ২০০৪ সালে পাকিস্তানের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর আফ্রিদির খেলাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেন। উলমারের অন্যতম প্রধান কাজ ছিল আফ্রিদির ব্যাটিংকে আরও স্বাধীন করা।

যদি আফ্রিদি দুটি ছক্কা মারার পর তৃতীয়বার ব্যর্থ হতেন, উলমার তাকে সমালোচনা না করে বরং প্রশংসা করতেন এবং বলতেন যে তিনি যেন আগের শটগুলোর পুনরাবৃত্তি করেন। এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল বিপরীতমুখী, কারণ তখন পর্যন্ত আফ্রিদিকে শুধুই এক গৌরবময় হিটার হিসেবে দেখা হতো, যার শট নির্বাচন নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলতেন। উলমার বুঝতে পেরেছিলেন যে আফ্রিদির প্রকৃত প্রভাব তখনই আসে যখন তিনি নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেন—যেমনটি তাঁর অভিষেক শতকে দেখা গিয়েছিল।

উলমার আমলে আফ্রিদির কিছু অসাধারণ ইনিংস এসেছিল, বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ গুলোতে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৪ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে ১২ বলে ২৫ রান, ২০০৫ সালের সফরে টেস্ট ওপেনার হিসেবে ধারাবাহিক অর্ধশতক এবং কানপুরে ৪৬ বলে সেঞ্চুরি। উলমারের ভাবনা টি-টোয়েন্টির আধুনিক দর্শনের সাথেও মিলে যায়—যেখানে উইকেট হারানোর চেয়ে প্রভাবশালী ইনিংস খেলাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আফ্রিদির দীর্ঘ ক্যারিয়ার নিশ্চিত করেছে যে তিনি প্রচুর টি-টোয়েন্টি খেলেছেন, তবে বাস্তবে তিনি ফরম্যাটটি জনপ্রিয় হওয়ার আগেই এই ধরনের ক্রিকেট খেলছিলেন। তার ব্যাটিং-সংক্রান্ত পরিসংখ্যানও এটিকে সমর্থন করে। ১৯৯৬ সালে অভিষেক থেকে ২০০৭ সালের শেষ পর্যন্ত, যখন টি-টোয়েন্টি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছিল, আফ্রিদি প্রতি ২৩ বলের মধ্যে অন্তত একটি ছক্কা মেরেছেন, যা ছিল সমসাময়িকদের মধ্যে দ্বিগুণেরও বেশি। একই সময়ে, তার স্ট্রাইক রেট গড়ে অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের চেয়ে ১.৫২ গুণ বেশি ছিল, যা ১,০০০ বা তার বেশি ওয়ানডে রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ।

শহীদ আফ্রিদির খেলার ধরন প্রমাণ করে যে তিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আবিষ্কারের আগেই এই ফরম্যাটের একজন প্রকৃত প্রতিনিধি ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *