
পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে দেশটির সেনাবাহিনীর একটি গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছে এক নারী। এতে হামলাকারী নারীসহ এক সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও চারজন সেনা।
সোমবার (৩ মার্চ) বেলুচিস্তানের কালাত জেলার মুঘলজাই এলাকায় হাইওয়ের কাছে এই হামলা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালাতের ডেপুটি কমিশনার বিলাল শাব্বির। তিনি জানান, সেনাবাহিনীর সীমান্তরক্ষী বিভাগের গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়।
হামলার দায় স্বীকার করেনি কেউ
এখনও পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলার পেছনে থাকতে পারে। এর আগেও সংগঠনটি আত্মঘাতী হামলায় নারীদের ব্যবহারের নজির স্থাপন করেছে।
নারী আত্মঘাতী হামলাকারীর নজির বিরল
পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলা নতুন কিছু নয়, তবে হামলাকারী হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ বিরল। ২০২২ সালের এপ্রিলে করাচিতে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটে এমনই এক হামলায় তিনজন চীনা নাগরিক নিহত হয়েছিলেন, যার দায় স্বীকার করেছিল বিএলএ।
বেলুচিস্তান: দারিদ্র্য ও বিদ্রোহের কেন্দ্রবিন্দু ভৌগলিক আয়তনের দিক থেকে বেলুচিস্তান পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ। যদিও এটি খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ, তবে এখানকার জনগণ দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকেই বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন চলছে।
পাকিস্তানে সহিংসতার উল্লম্ফন
গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বেড়েছে। সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে দেশজুড়ে ১,৬০০-এর বেশি মানুষ হামলায় নিহত হন, যাদের মধ্যে ৬৮৫ জন ছিলেন পুলিশ ও সেনাসদস্য।
সরকারি প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি হামলার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং আহত সেনাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।